একজন নারী গর্ভবতী কিনা তা কিছু লক্ষন বা উপসর্গের উপর ভিত্তি করে নির্ণয় করা যেতে পারে।
গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষন সম্পর্কে আজ আমরা জানবো।
গর্ভধারনের ১২ টি প্রাথমিক লক্ষন (12 Pregnancy Symptom)
১. মাসিক মিস হওয়া:
গর্ভধারণের প্রধান লক্ষন সমূহের একটি হচ্ছে মাসিক মিস হওয়া। মাসিক মিস হওয়ার ১ -২ সপ্তাহের মধ্যেই আপনি ঘরে বসে টেস্ট করে জেনে নিতে পারেন আপনি গর্ভবতী কিনা।
কিন্তু আপনার যদি অনিয়মিত মাসিক হয় তাহলে অন্যান্য উপসর্গগুলো মিলিয়ে নিন। যদি অন্যান্য উপসর্গগুলো আপনার মধ্যে দেখতে পান তাহলে খুব সম্ভবত আপনি গর্ভবতী।
২. ক্লানি বা অবসাদ:
যেহেতু প্রোজেস্টেরন (progesterone) হরমোনের মাত্রা শরীরে অনেক বেশি থাকে কাজেই ক্লান্তি বা অবসাদও বেশি দেখা যায়। ক্লান্তি গর্ভাবস্থায় যেকোন সময়ে দেখা দিলেও প্রথম দিকে সেটা বেশি কমন।
৩. খাবারে অনীহা ও গন্ধ লাগা:
এই লক্ষনটি অনেক গর্ভবতী নারীদের মধ্যে দেখা দিলেও এটি কেনো হচ্ছে এর সুস্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা নেই। খুব সম্ভবত আপনার শরীরে ক্রমবর্ধমান ইস্ট্রোজেন হরমোনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এটা। গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে এই লক্ষনটি বেশী প্রতিয়মান হয়।
৪. শরীরের তাপমাত্রা বেশী থাকা:
শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকাও গর্ভাবস্থা বা প্রেগন্যান্সির শুরুর দিকের একটি লক্ষণ। আপনি যদি টানা কয়েকদিন আপনার শরীরের তাপমাত্রা বেশী অনুভব করেন তাহলে আপনি সম্ভবত গর্ভবতী।
৫. মর্নিং সিকনেস, বমি বমি ভাব এবং বমি:
বমি বমি ভাব, মর্নিং সিকনেস সাধারণত (৪-৬) সপ্তাহেই শুরু হতে দেখা যায়। যদিও এর নাম মর্নিং সিকনেস, তাও এই দুর্বলতা বা অসুস্থতা দিন বা রাতের যে কোন সময়ই দেখা দিতে পারে। প্রেগন্যান্সির প্রথম তিন মাসে অনেক মহিলারই এই মর্নিং সিকনেস দেখা যায়।
৬. স্তনে ব্যথা ও স্তন স্ফীত হওয়া:
গর্ভধারণের পর শরীরে কিছু হরমোনের উঠানামার কারনে স্তনে ব্যথা হতে পারে, সেই সাথে স্তন স্ফীত হতে পারে। তবে এই ব্যথা শুধু প্রথম ট্রিমিস্টারেই হয়ে থাকে।
৭. ঘন ঘন মূত্র ত্যাগ করা:
হরমোনগত পরিবর্তনের কারনে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি পায়। আর এ কারনে বারবার প্রস্রাবের বেগ আসে। আর ক্ষানিকক্ষন বাদে বাদেই মূত্র ত্যাগ করতে হয়।
৮. ক্র্যাম্পিং:
ক্র্যাম্পিং বা পেট আঁকড়ে ধরা প্রেগন্যান্সির শুরুর দিকের একটি কমন উপসর্গ। ব্যথা মৃদু থেকে মধ্যম ধরনের হতে পারে। এর সাথে কিছুটা ব্লিডিং বা রক্তপাতও দেখা দিতে পারে। মূলত ইমপ্ল্যানটেশনের (Implantation) জন্য এটা হয়ে থাকে।
৯. রক্তচাপ ও মাথাঘোরা:
প্রেগন্যান্সির শুরুর দিকের ধাপে রক্তচাপ নেমে যায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই। এর ফলে মাথা ঘুরে। রক্তচাপ ও মাথা ঘুরা গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম।
১০. ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ:
কোনও সংক্রমণের কারণে এমন হতে পারে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে গর্ভবতী মহিলাদেরও এই ডিসচার্জ হয়। কিছু কিছু মহিলার প্রেগনেন্সির প্রথম তিনমাসে ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ হয়ে থাকে। হরমোনে পরিবর্তনের ফলে এই ডিসচার্জ হয়।
১১. ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং, স্পটিং:
সহবাসের পর নিষিক্ত ডিম্বানু নিজেকে জরায়ুর দেয়ালে আটকে নেয়। এসময় স্পটিং (স্বল্প রক্তপাত) ও মাসিকের ব্যাথার মতো ব্যাথা হতে পারে।
১২. মুড সুইং বা মন মেজাজের উঠানামা:
গর্ভবতী মায়ের শরীরে এসময় হরমোন বদলের কারণে ব্রেনের অভ্যন্তরে মেসেজ বহনকারী নিউরোট্রান্সমিটারের পরিমানে পরিবর্তন আসে। গর্ভাবস্থায় মহিলাদের মেজাজও খিটখিটে হয়ে থাকে অনেক সময়। কখনো তারা ফুরফুরে থাকে আবার কখনো চড়া মেজাজে।